ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম | E-Passport Application Process

ই-পাসপোর্ট করার সহজ নিয়ম - ঘরে বসে আবেদন করুন!

পাসপোর্ট হলো একজন নাগরিকের জাতীয়তা ও পরিচয় প্রমাণকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথি। এটি আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য অপরিহার্য এবং এতে ধারকের নাম, ছবি, জন্ম তারিখ, ঠিকানা, জাতীয়তা, পাসপোর্ট নম্বর, ইস্যু তারিখ ও মেয়াদ উল্লেখ থাকে।

বর্তমানে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট যুগে প্রবেশ করেছে। মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (MRP) পরিবর্তে এখন ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (e-passport) ইস্যু করা হচ্ছে। ই-পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ ও ব্যবহারকারী-বান্ধব, যা ঘরে বসেই সম্পন্ন করা যায়। তবে, আবেদন করার আগে নিয়ম, খরচ ও ডেলিভারি সময় সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরি।

একবার আবেদন জমা দেওয়ার পর ভুল তথ্য সংশোধন করা সম্ভব নয়। এছাড়াও, একটি ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে শুধুমাত্র একবারই ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা যায়।

ই-পাসপোর্ট করার ধাপসমূহ

ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়া দুটি ধাপে সম্পন্ন হয়:
১. অনলাইনে আবেদন করা।
২. সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান।

ধাপ ১: অনলাইনে আবেদন

  • প্রথমে ই-পাসপোর্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে (www.epassport.gov.bd) গিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট খুলুন।
  • সঠিক তথ্য দিয়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করুন।
  • আবেদন ফি অনলাইনে জমা দিন।

ধাপ ২: বায়োমেট্রিক ও ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন

  • আবেদন জমা দেওয়ার পর নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হয়ে ছবি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং সিগনেচার প্রদান করতে হবে।
  • এরপর আপনার আবেদন যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে।
বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম

ই-পাসপোর্ট প্রসেসিং সময় ও ডেলিভারি

সাধারণত, নিয়মিত আবেদন প্রক্রিয়ায় ১৫-৩০ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রস্তুত হয়ে যায়। তবে দ্রুত সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চার্জ প্রযোজ্য।


কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:

  • আবেদন করার আগে সব তথ্য সতর্কতার সঙ্গে পূরণ করুন।
  • একবার আবেদন জমা দিলে তা সংশোধনের সুযোগ থাকে না।
  • পাসপোর্ট ডেলিভারির সময় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সঙ্গে নিয়ে যান।

ই-পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম

ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা এখন অনেক সহজ। নিচে ধাপে ধাপে আবেদন করার প্রক্রিয়া উল্লেখ করা হলো:

  1. বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট অনলাইন পোর্টাল ভিজিট করুন
    ওয়েবসাইটের লিংক: www.epassport.gov.bd
  2. “অ্যাপ্লাই অনলাইন (Apply Online)” এ ক্লিক করুন
    আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে Apply Online অপশনে ক্লিক করুন।
  3. নির্দেশাবলী অনুসারে ফরম পূরণ করুন
    সঠিক তথ্য দিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করুন। যেকোনো ভুল তথ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, তাই সাবধানতা অবলম্বন করুন।
  4. আবেদন ফি পরিশোধ করুন
    নির্ধারিত ফি অনলাইনে বা ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করুন।
  5. ছবি তোলার ও আঙুলের ছাপ দেওয়ার জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিন
    ফরম জমা দেওয়ার পর আপনার সুবিধামতো একটি তারিখ ও সময় নির্ধারণ করুন।
  6. নির্ধারিত তারিখে বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করুন
    পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হয়ে ছবি তোলা, আঙুলের ছাপ এবং সিগনেচার প্রদান করুন।
  7. পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ সংগ্রহ করুন
    বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়া শেষ হলে পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য ডেলিভারি স্লিপ দেওয়া হবে।

এভাবে ধাপগুলো অনুসরণ করে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন সম্পন্ন করা যায়। সময়মতো ডেলিভারি স্লিপ এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করুন।

পাসপোর্ট করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ই-পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ ও ফি পরিশোধ করার পরে ছবি তোলা এবং আঙুলের ছাপ দেওয়ার জন্য পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার সময় নিচের ডকুমেন্টগুলো সঙ্গে নিতে হবে:

অনলাইন আবেদন কপি

  • পাসপোর্ট আবেদন ফরমের প্রিন্টেড কপি
  • পাসপোর্ট ফি পরিশোধের রিসিট

ঠিকানার প্রমাণ (যেকোনো একটি)

  • বিদ্যুৎ বিলের কপি (আপনার বর্তমান ঠিকানার জন্য)
  • গ্যাস বিল
  • পানি বিল
  • টেলিফোন বিল
  • সিটি কর্পোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ
  • ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সনদ

পরিচয়পত্র

  • জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
  • ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি
  • পূর্ববর্তী পাসপোর্টের ফটোকপি (যদি থাকে)

অন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • ২ কপি সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজ ছবি (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড)

অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে বিশেষ ডকুমেন্ট

  • জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি
  • পিতা/মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি

পাসপোর্ট অফিসে করণীয়

  1. প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের মূল কপি এবং ফটোকপি নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হন।
  2. আপনার সিরিয়াল অনুযায়ী বায়োমেট্রিক তথ্য (ছবি, আঙুলের ছাপ, স্বাক্ষর) প্রদান করুন।
  3. বায়োমেট্রিক সম্পন্ন হওয়ার পরে পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ সংগ্রহ করুন।

মনে রাখা জরুরী

  • সব তথ্য আপডেট এবং সঠিক থাকতে হবে।
  • অনলাইন ফরমে দেওয়া তথ্যের সাথে কাগজপত্রের তথ্য মিল থাকতে হবে।
  • একবার আবেদন জমা দেওয়ার পর তথ্য সংশোধন করার সুযোগ নেই।
  • ভুল তথ্যের কারণে আবেদন বাতিল হতে পারে।

ডেলিভারি প্রসেস

বায়োমেট্রিক ও ভেরিফিকেশন শেষ হলে পাসপোর্ট প্রসেসিংয়ে যাবে। এরপর:

  1. পুলিশ ভেরিফিকেশন ও অন্যান্য যাচাই-বাছাই হবে।
  2. পাসপোর্ট প্রিন্ট হয়ে নির্ধারিত পাসপোর্ট অফিসে পৌঁছাবে।
  3. আপনার মোবাইল নম্বরে এসএমএসের মাধ্যমে ডেলিভারি স্ট্যাটাস জানানো হবে।
  4. অনলাইনে পাসপোর্ট স্ট্যাটাস চেক করে ডেলিভারি নিশ্চিত করুন।
  5. ডেলিভারি স্লিপ জমা দিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করুন।

আরো জানুনঃ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top