কিছু অসতর্কতা জন্য এবং সামান্য কয়েকটি ভুলের কারন এনআইডি অ্যাকাউন্ট লক হয়ে যেতে পারে। আজকের এই ব্লগ পোস্টে জানতে পারবেন কি কি ভুলের কারনে বা কি কারনে NID Account Lock হয়ে যায়, এনআইডি অ্যাকাউন্ট লক হলে করণীয় কি এবং কিভাবে সমাধান করা যায়।
আমরা বিভিন্ন সেবার নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্রের ওয়েবসাইটে রেজিষ্ট্রেশন করে থাকি। নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করা থেকে শুরু করে, নতুন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড, হারানো আইডি কার্ড উত্তোলন, এনআইডি সংশোধনের আবেদন, সংশোধন হওয়ার পর আইডি কার্ড ডাউনসহ অন্যান্য সেবা নিতে এনআইডি সার্ভারে রেজিস্ট্রেশন করি। এনআইডি এ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করার সময় আমাদেরকে একটি ID & Password দিয়ে থাকে। পরবর্তীতে সেই আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে আমাদের এনআইডি অ্যাকাউন্টে লগইন করে থাকি।
কিছু ভুলের কারনে সাময়িকভাবে NID Account Locked হয়ে যায়। পরবর্তীতে আবার লক খুলে দেওয়া হয়।
কি কি ভুলের কারনে এনআইডি অ্যাকাউন্ট লক হয়
- Account Registration করার সময় পর পর ৩ বার ভুল তথ্য (যেমনঃ জন্ম তারিখ, আইডি নাম্বার, ঠিকানা) দেওয়ার কারনে এনআইডি অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে লক হয়ে যায়।
- অ্যাকাউন্ট লগইন করার সময় আইডি নাম্বার বা পাসওয়ার্ড যদি ৩ বার ভুল প্রদান করা হয় তখন লক হয়ে যায়।
- ব্যক্তির উপস্থিতি ছাড়া যদি ফেস ফেরিফিকেশনের চেস্টা করলে।
উপরোক্ত ৩টি ভুলের কারনে একাউন্ট লক হয়ে যায়। একাউন্ট লক হয়ে যাওয়ার সময় Red Warning দেখিয়ে “Account Locked” করে দেয়। সার্ভার মনে করে কোন হ্যাকার ব্যক্তির তথ্য চুরি করার চেস্টা করছে অথবা ভুলের কারনে কোন সন্দেহজনক কিছু মনে করলে সার্ভার এনআইডি একাউান্ট লক করে দেয়।
এনআইডি নাম্বার ও জন্ম তারিখ ভুল প্রবেশ করার কারনে
এনআইডি সার্ভার services.nidw.gov.bd এ প্রবেশ করে যখন রেজিস্ট্রেশন করতে চান তখন এনআইডি নাম্বার, জন্মতারিখ প্রবেশ করিয়ে ক্যাপচা দিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হয়। এখানে এনআইডি নাম্বার বা জন্ম তারিখ যদি ভুল হয় এবং পর পর ৩ বার ভুলভাবে দিয়ে চেস্টা করেন তখন এনআইডি লক হয়ে যায়।
সতকর্তাঃ একাউন্ট রেজিস্ট্রেন করার সময় প্রথমবার আইডি নাম্বার ও জন্ম তারিখ প্রবেশ করার পর ভুল হলে, ২য় বার সঠিকভাবে আবার ট্রাই করবেন। ২য় বারও যদি ভুল হয় তাহলে ৩য় বার আর ট্রাই করবেন না। কিছু সময় পর আবার ট্রাই করবেন তবে চেস্টা করার আগে আপনার আইডি কার্ড নাম্বার নিশ্চিত হবেন এবং সার্টিফিকেট বা জন্ম সনদ দেখে জন্ম তারিখ নিশ্চিত হবেন।
আরো জানুনঃ
অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন করার নিয়ম
ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে করণীয়
ঠিকানা ভুল দেওয়ার জন্য NID Account Lock
এনআইডি নাম্বার, জন্ম তারিখ এবং ক্যাপচা প্রবেশ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করার পরে ঠিকানা অংশ সিলেক্ট করতে হয়। এই ঠিকানা অংশে ভোটার আইডি কার্ডের বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা সঠিকভাবে প্রবেশ না করার কারনে এনআইডি অ্যাকাউন্ট লক হয়ে যায়। ঠিকানা অংশে বিভাগ, জেলা, উপজেলার নাম সঠিকভাবে জানা না থাকলে ভোটার হওয়ার সময় কোন ডকুমেন্ট দেখে ভোটার হয়েছিলেন তা যাচাই করবেন অথবা উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা জেনে সঠিকভাবে বসিয়ে দিবেন। ৩ বার ভুলভাবে চেস্টা করলে NID Account Lock হয়ে যাবে।
এনআইডি অ্যাকাউন্ট লক হলে করণীয় কি
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের একটি হেল্প লাইন নাম্বার রয়েছে। এনআইডি অ্যাকাউন্ট লক হলে এনআইডি হেল্প লাইন নাম্বার ১০৫ এ ফোন দিয়ে সমাধান করতে পারবেন। একাউন্ট লক হলে হেল্প লাইন নাম্বার ১০৫ এ ফোন করতে হবে। একজন কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি আপনার ফোনটি রিসিভ করলে তাকে আপনার বিষয়টি জানিয়ে তার কাছে অনুরোধ করবেন। এরপর আপনার এনআইডি নাম্বার জানতে চাইলে নাম্বারটি দিবেন। এরপর এনআইডি একাউন্ট লক খুলে যাবে।
এনআইডি লক হলে কয়েকটি উপায়ে লক ছাড়ানো যায়ঃ
- ৭২ ঘন্টা অপেক্ষার পর লক খুলে যাবে। (এনআইডি একাউন্ট লক হলে ৭২ ঘন্টা অপেক্ষা করবেন, এরপর অটোমেটিক লক খুলে যাবে)
- উপজেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করবেন।
- এনআইডি হেল্প লাইন নাম্বার ১০৫ এ ফোন দিলে সমাধান পাবেন।
প্রথমেই বলা হয়েছে যে, এনআইডি লক একটি সাময়িক সমস্যা। তাই চিন্তার কোন কারন নেই। এনআইডি লক হলে ৭২ ঘন্টা অপেক্ষা করবেন। লক হওয়ার পর ৭২ ঘন্টার মধ্যে নতুন করে একাউন্টে প্রবেশ করার চেস্টা করা যাবে না। ৭২ ঘন্টা পর সঠিকভাবে চেস্টা করবেন, তখন অটোমেটিক লক খুলে যাবে।
আর যদি জরুরী হয় তাহলে হেল্প লাইন নাম্বার ১০৫ এ ফোন দিয়ে লক খুলে দেওয়ার অনুরোধ করলে লক খুলে দিবে। এছাড়া আপনি চাইলে আপনার উপজেলা নির্বাচন বা থানা নির্বাচন অফিসে গিয়ে বিষয়টা অবগত করলে উপজেলা নির্বাচন অফিসার লক খুলে দিতে পারে।
জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড দেশের প্রতিটা মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট। যা ব্যাংক একাউন্ট খোলা থেকে শুরু করে, চাকুরির ক্ষেত্রে, সন্তানের স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে, পাসপোর্ট বা জন্ম নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে, বিকাশ-রকেট-নগদসহ সকল মোবাইল ব্যাংকিং এ্যাকাউন্ট খোলা সহ প্রায় সকল কাজেই NID Card প্রয়োজন হয়। তার নিজের এনআইডি অ্যাকাউন্ট সুরক্ষা রাখতে সচেতন হোন।
এনআইডি সংক্রান্ত সকল ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
এনআইডি সম্পর্কিত আরও তথ্য জানুন
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে