জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের ভুল সংশোধন করতে নির্দিষ্ট পরিমান ফি পরিশোধ করতে হয়। আবার আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড হারিয়ে গেলে নির্দিষ্ট ফি পরিশোধ করে নতুন কার্ড উত্তোলন করতে হয়। এছাড়াও স্মার্ট কার্ড উত্তোলন করতে কত টাকা ফি দিতে হয় এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের সংশোধন/হারানো/নতুন স্মার্ট কার্ড উত্তোলন করতে কত টাকা ফি পরিশোধ করতে হয় এবং কিভাবে আপনি পরিশোধ করবেন তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা করবো এই আর্টিকেলে। মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি কত টাকা
আপনার এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র যদি সংশোধন করতে চান তাহলে নির্দিষ্ট পরিমান ফি পরিশোধ করতে হবে। আপনার সংশোধনের ধরনের উপর নির্ভর করে কত টাকা আপনি ফি পরিশোধ করবেন। যদি আইডি কার্ডে নিজের নাম, পিতা-মাতার নাম, জন্ম তারিখ এসব সংশোধন করতে চান তাহলে ২৩০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। (অতিরিক্ত ৬ টাকা চার্জ প্রযোজ্য)
জাতীয় পরিচয়পত্রের সংশোধনের ক্ষেত্রে আবেদনের ফি পরিশোধের তথ্যকে ৩ টি ভাগে ভাগ করা হয়ঃ
- ১। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন
- ২। অন্যান্য তথ্য সংশোধন
- ৩। জাতীয় পরিচয়পত্র ও অন্যান্য তথ্য সংশোধন
১। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন
আপনার যদি ভোটার আইডি কার্ডের নাম, পিতা-মাতার নাম, জন্ম তারিখ, রক্তের গ্রুপ, ছবি এবং স্বাক্ষর পরিবর্তন বা সংশোধন করতে চান তাহলে এই জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন এই অপশন সিলেক্ট করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার ২৩০ টাকা ফি পরিশোধ করতে হবে।
২। অন্যান্য তথ্য সংশোধন
জাতীয় পরিচয়পত্রের যদি পাসপোর্ট নাম্বার, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, টিন নাম্বার, ড্রাইভিং লাইসেন্স নাম্বার, ধর্ম এবং মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন বা সংশোধন করতে চান তাহলে এই অপশন সিলেক্ট করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে ১১৫ টাকা ফি পরিশোধ করতে হবে। গ্রামের নাম এবং ডাকঘর, পোস্ট কোড সংশোধন করতে চাইলেও ১১৫ টাকা ফি পরিশোধ করতে হবে।
৩। জাতীয় পরিচয়পত্র ও অন্যান্য তথ্য সংশোধন
এই অপশনটা তখনই সিলেক্ট করতে হয় যখন আপনি ১। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন এবং ২। অন্যান্য তথ্য সংশোধন এর দুইটির মধ্যে অন্তর্গত বিষয় একসাথে সংশোধনের আবেদন করতে চান সেক্ষেত্রে এই অপশন সিলেক্ট করতে হয়। এক্ষেত্রে ৩৪৫ টাকা ফি পরিশোধ করতে হবে।
এনআইডি সংশোধন ফি পরিশোধ করতে আমার পরামর্শ
এনআইডি সংশোধন ফি কত টাকা পরিশোধ করতে হবে তা আপনি নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে জানতে পারবেন। এজন্য ফি হিসাব করুন ক্লিক করুন। এরপর আপনার এনআইডি নাম্বার দিন, আবেদনের ধরন সিলেক্ট করুন, বিতরণের ধরণ সিলেক্ট করুন, সবশেষে ছবিতে প্রদর্শিত ক্যাপচা বসিয়ে ফি হিসাব করুন বাটনে ক্লিক করলেই জেনে যাবেন যে, আপনার ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা ফি দিতে হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র রিইস্যু ফি কত টাকা
রিইস্যু বলতে বুঝায়, আইডি কার্ড হারানো, আইডি কার্ড নস্ট হয়ে যাওয়া, আইডি কার্ড স্থানান্তর করার পরে নতুন কার্ড প্রাপ্তির জন্য আবেদন। অথ্যাৎ যেকোন কারনবশত আপনি যদি নতুন এনআইডি কার্ড প্রাপ্তির জন্য আবেদন করেন তাহলে রিইস্যু সিলেক্ট করতে হবে। আর জাতীয় পরিচয়পত্র রিইস্যুর ক্ষেত্রে সাধারণ ২৩০ টাকা ফি পরিশোধ এবং আর্জেন্ট বা জরুরি ৩৪৫ টাকা ফি পরিশোধ করে আবেদন করতে হয়।
- ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম
- ভোটার আইডি কার্ডের বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করার নিয়ম
- ভোটার তথ্য যাচাই পদ্ধতি
জাতীয় পরিচয়পত্রের ফি কিভাবে পরিশোধ করবেন
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন বা হারানো ফি ২ ভাবে পরিশোধ করা যায়। ১। ব্যাংকে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে ২। মোবাইল ব্যাংকি (বিকাশ/রকেট) এর মাধ্যমে।
ব্যাংকে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে ফি পরিশোধ
এনআইডি সংশোধন ফি বাংলাদেশ ব্যাংকের সকল শাখা এবং সোনালী ব্যাংকে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে হয়। ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে নিচের ছবির নির্দেশনা অনুসরণ করুন।
বিকাশের মাধ্যমে এনআইডি ফি পরিশোধ
প্রথমে সাজেশন দিবো যে, এনআইডি সংশোধন বা হারানো ফি ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে না দিয়ে মোবাইল ব্যাংকি বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করুন। বিকাশে পেমেন্ট ঝামেলা মুক্ত এবং সময়ের অপচয় হবে না।
বিকাশে পেমেন্ট করতে বিকাশ এ্যাপ ওপেন করে পে-বিল অপশন সিলেক্ট করলে নির্বাচন কমিশনের লোগো সম্বলিত অপশন পাবেন (যার কোড ১০০০)। এটি সিলেক্ট করে পরবর্তী ধাপগুলো সম্পন্ন করার মাধ্যমে খুব সহজে পেমেন্ট পরিশোধ করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে নিচের ভিডিওটি দেখতে পারেন।
অনলাইন আবেদন করার পূর্বেই ফি জমা দিতে হয় কি?
অবশ্যই আবেদন করার প্রথম কাজ হবে ফি পরিশোধ করা। ফি পরিশোধ না করা থাকলে অনলাইন আবেদন করতে গিয়ে আটকে যাবেন। সুতরাং প্রথমে পেমেন্ট পরিশোধ করতে হবে এবং পরবর্তীতে আবেদন করতে হবে। তাই অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন বা রিইস্যুর জন্য আবেদন করার পূর্বে বিকাশ বা রকেট এ্যাপস ব্যবহার করুন। আপনার এনআইডি নম্বরের অনূকুলে ১০০০ নম্বরে পেমেন্ট করে নিতে হবে।