জমির উপর বিদ্যুতের খুঁটি বা তার আছে? সরাতে চান? জেনে নিন সহজ প্রক্রিয়া

বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর আবেদন প্রক্রিয়া – বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ

বাংলাদেশে অনেকের জমির উপর দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি বা তার চলে গেছে, যা জমির ব্যবহার, ঘর নির্মাণ বা অন্যান্য কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে। এ সমস্যার সমাধান সম্ভব, তবে প্রক্রিয়াটি জানা না থাকায় অনেকেই দ্বিধায় থাকেন। আজ আমরা জানব বিদ্যুতের খুঁটি বা তার স্থানান্তরের জন্য কীভাবে আবেদন করতে হয়, কী কী কাগজপত্র লাগবে এবং প্রক্রিয়ার ধাপগুলো কী।

কেন বিদ্যুতের খুঁটি বা তার সরানো প্রয়োজন হতে পারে?

  • জমিতে ঘর বা দোকান নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলে
  • জমির সৌন্দর্য বা ব্যবহার বাড়ানোর জন্য
  • নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি কমানোর জন্য
  • কৃষিজমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে

আবেদন করার জন্য যা যা লাগবে

খুঁটি বা তার সরানোর জন্য কিছু প্রাথমিক কাগজপত্র দরকার হয়। যেমনঃ

ভোটার আইডির ফটোকপি

জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ডের ফটোকপি অবশ্যই জমা দিতে হবে।

এক কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি

অবশ্যই ১ কপি রঙ্গিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি সাথে দিতে হবে।

সর্বশেষ বিদ্যুৎ বিলের কপি (যদি থাকে)

অবশ্যই সর্বশেষ মাসের পরিশোধিত বিদ্যুৎ বিলের কপি দিতে হবে।

কীভাবে আবেদন করবেন?

খুঁটি বা তার স্থানান্তরের জন্য আপনাকে আপনার নিকটস্থ বিদ্যুৎ অফিসে (পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বা সিটি করপোরেশন বিদ্যুৎ অফিস) আবেদন করতে হবে।

ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া

  1. ফরম পূরণ করুন – অফিসে গিয়ে নির্ধারিত ফরম সংগ্রহ করে পূরণ করুন। অনেকে ওয়েবসাইট থেকেও ফরম ডাউনলোড করতে পারেন।
  2. আবেদন ফি জমা দিন – সাধারণত ১,৭২৫ টাকা (ভ্যাটসহ) আবেদন ফি দিতে হয়। (ফি ভিন্ন হতে পারে)
  3. সাইট পরিদর্শন – বিদ্যুৎ অফিসের পরিদর্শক সরাসরি জায়গা দেখে আসবেন।
  4. স্থান নির্ধারণ – আপনি জানাবেন খুঁটি বা তার কোথায় সরাতে চান।
  5. খরচের চিঠি পাবেন – আপত্তি না থাকলে অফিস থেকে প্রয়োজনীয় খরচের একটি চিঠি আসবে।
  6. খরচ পরিশোধ – নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খরচ পরিশোধ করুন।
  7. ওয়ার্ক অর্ডার ও কাজ সম্পন্ন – টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঠিকাদার কাজটি সম্পন্ন করবে।

ফরম কোথায় পাওয়া যাবে?

অনলাইনে

আপনার জেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ওয়েবসাইটে “পোল স্থানান্তর/লাইন পরিবর্তন আবেদন ফরম” নামে ফরম পাওয়া যায়। যেমন:

সরাসরি

যদি অনলাইনে না পান, তাহলে নিকটস্থ বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়

  • কাজটি সময়সাপেক্ষ হতে পারে।
  • অন্যের জমিতে আপত্তি থাকলে কাজ হবে না।
  • বিভিন্ন বিদ্যুৎ কোম্পানির ক্ষেত্রে ফি ভিন্ন হতে পারে।

শেষ কথা

বিদ্যুতের খুঁটি বা তার স্থানান্তরের প্রক্রিয়াটি কিছুটা সময়সাপেক্ষ হলেও সহজ। সঠিক ফরম পূরণ, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং খরচ পরিশোধের মাধ্যমে এটি সম্পন্ন করা যায়। আপনার এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বা বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জেনে নিন।

আপনার অভিজ্ঞতা বা প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানান।

বিদ্যুৎ সংক্রান্ত আরও দরকারী তথ্য পেতে আমাদের ব্লগ ফলো করুন!

সতর্কতা

অন্যের জমিতে আপত্তি থাকলে খুঁটি সরানো সম্ভব নয়।

প্রশ্নউত্তর
বিদ্যুতের খুঁটি সরাতে কত টাকা লাগে?সাধারণত আবেদন ফি ১,৭২৫ টাকা (ভ্যাটসহ)। তবে মোট খরচ জমির অবস্থা ও কাজের ধরণের উপর নির্ভর করে।
আবেদন ফরম কোথায় পাওয়া যাবে?নিকটস্থ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে সরাসরি পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রে ওয়েবসাইট থেকেও ডাউনলোড করা যায়।
কত সময় লাগে খুঁটি বা তার সরাতে?প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ। সাধারণত পরিদর্শন, খরচ নির্ধারণ ও কাজ সম্পন্ন করতে কয়েক সপ্তাহ বা মাসও লাগতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top