ভোটার আইডি কার্ডের স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করার নিয়ম নিয়ে এ টু জেড আলোচনা করা হয়েছে। এই ব্লগটি পড়লে এনআইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন খুব সহজে নিজেই করতে পারবেন। ভোটার আইডি কার্ডের স্থায়ী ঠিকানা সংশোধন করার জন্য অনলাইনে আবেদন করলে হবে না। এনআইডি কার্ডের বর্তমান ঠিকানা সংশোধন এবং এনআইডি কার্ডের নিজের নাম, পিতা ও মাতার নাম, বয়স ইত্যাদি অনলাইনে সংশোধন করা গেলেও এনআইডি কার্ডের স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য অফিসে গিয়ে ম্যানুয়ালি আবেদন জমা দিতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ডের বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন করার নিয়ম
জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য ১৩ নম্বর ফরম পূরন করে আবেদন করতে হবে। Nid Card এর বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন করতে চাইলে ক্লিক করুন।
ভোটার আইডি কার্ডের স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করার নিয়ম
ভোটার আইডি কার্ড বা এনআইডি কার্ডের স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য সংশোধন ফরম-২ পূরন করতে হবে। এরপর এই ফরম-২ এর সাথে প্রামান্য নথিপত্র সংযুক্ত করে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে জমা দিতে হবে।
সংশোধন ফরম-২ ডাউনলোড করার জন্য সরাসরি এখানে ক্লিক করুন অথবা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে যাবেন। এরপর ম্যেনুবার থেকে ডাউনলোড ম্যেনুতে ক্লিক করবেন। এরপর ” তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন ফরম (উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে আবেদনের জন্য)” এর উপর ক্লিক করে সংশোধনী ফরম ডাউনলোড করে নিবেন। অথবা সংশোধন ফরমের পিডিএফ কপিটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিন।
Nid Card এর স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন ফরম ফিলাপ পদ্ধতি
ভোটার আইডি কার্ডের বা জাতীয় পরিচয়পত্রের স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তনের ফরমটি যথাযথভাবে ফিলাপ করতে হবে। ফরমের ক্রমিক ১ এর (ক) অংশে নিজের নাম লিখতে হবে, ক্রমিক ১ এর (খ) অংশে জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার, ক্রমিক ৩ এর (ছ) অংশে জাতীয় পরিচয়পত্রে বিদ্যমান তথ্যের কলামে ভোটার আইডি কার্ডে থাকা বিদ্যমান ঠিকানা লিখতে হবে এবং চাহিত সংশোধিত তথ্যের কলামে এখন যে ঠিকানাকে স্থায়ী ঠিকানা করতে চাচ্ছেন সেই ঠিকানা লিখতে হবে।
এনআইডি কার্ডের স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করতে কি কি কাগজপত্র লাগে
এনআইডি কার্ডের স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য নিচের কাগজগুলো লাগবে। যা ফিলাপকৃত ফরমের সাথে স্ট্যাপলিং করে উপজেলা / থানা নির্বাচন অফিসে গিয়ে স্বশরীরে জমা দিতে হবে।
- অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- চেয়ারম্যান / কাউন্সিলর -এর প্রত্যয়ন/নাগরিক সনদ
- ইউটিলিটি (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস) বিলের কপি/ জমির খতিয়ান/ খাজনা প্রদানের রশিদ
- পাসপোর্ট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন ফি পরিশোধ
ভোটার আইডি কার্ডের স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন এর জন্য নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত ফি ১১৫ টাকা পরিশোধ করতে হবে। সংশোধনী ফি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশ এবং রকেটের মাধ্যমে পরিশোধ করা যায়। এছাড়াও ব্যাংক চালানের মাধ্যমেও পরিশোধ করতে পারবেন। ব্যাংক চালান করার ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে চালানের কোড জেনে নিতে হবে।
মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট দেওয়া সুবিধা বিধায় আপনি বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করবেন। এজন্য বিকাশ এ্যাকাউন্ট থেকে পে বিল অপশন>এনআইডি সার্ভিস>আবেদনের ধরন সিলেক্ট>এনআইডি নাম্বার দিয়ে বিকাশে পেমেন্ট করতে হবে। বিকাশ পেমেন্ট করার সময় ৬ টাকা বিকাশ চার্জ কর্তন করবে। আপনি নিজে পেমেন্ট না করতে পারলে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে তাদের বললে তারা পেমেন্ট করে দিতে সাহায্য করবে।
এনআইডি কার্ডের স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করার আবেদন জমা এবং সংশোধন
সংশোধনী আবেদন ফরম এবং এর সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে উপজেলা নির্বাচন অফিস বা থানা নির্বাচন অফিসে গিয়ে জমা দিয়ে আসলেই কাজ শেষ। এরপর ১ সপ্তাহ হতে ২ সপ্তাহের মধ্যে আপনার দেওয়া মোবাইল নাম্বারে ১০৫ নাম্বার থেকে ম্যাসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে যে, আপনার এনআইডি কার্ডটি সংশোধন হয়ে গেছে অনলাইন সিস্টেম হতে অথবা উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে নতুন এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করে নিন। ম্যাসেজটি পাওয়ার পর আপনি আপনার অনলাইন ডাটাবেজে প্রবেশ করে ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করে নতুন আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। এরপর ডাউনলোড করা এনআইডি কার্ডের পিডিএফ কপিটি প্রিন্ট করে লেমিনিটিং করে নিলেই আপনার কাজ শেষ। হাতে পেয়ে গেলেন নতুন এনআইডি কার্ড।
ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা সংশোধন এবং পরিবর্তন এর মধ্যে পার্থক্য কি?
ভোটার আইডি কার্ডে ২ টি ঠিকানা থাকে। বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা। আর এই ঠিকানায় গ্রামের নামে ভুল, ডাকঘর ভুল, পোস্ট কোড ভুল, বাড়ির নাম এসবে ভুল থাকলে তা ঠিক করাকে ঠিকানা সংশোধন বলা হয়। অন্য দিকে, এক ভোটার এলাকা থেকে অন্য ভোটার এলাকায় ভোটার স্থানান্তর করতে ঠিকানা পরিবর্তন বলা হয়।
শেষ কথা
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে ৯ বছর ধরে চাকরির অভিজ্ঞতায় এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে সব সময় চেষ্টা করি সঠিক পরামর্শ দেওয়ার জন্য। আমি খুব কাছ থেকে দেখি সরকারি অফিসগুলোতে সাধারন মানুষের ভোগান্তি। আর এজন্য যাতে সাধারন মানুষের ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমাতে পারলে আমি নিজেকে এবং নিজের কাজকে সার্থক মনে করবো।