ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন বা ভোটার এলাকা স্থানান্তর করার নিয়ম

ভোটার এলাকা পরিবর্তন বা স্থানান্তর করার জন্য আপনাকে ম্যানুয়ালি বা অফিসে গিয়ে আবেদন করতে হবে। অনলাইনে আবেদন করা যাবে না। আর ম্যানুয়ালি আবেদন করার জন্য প্রথমে ভোটার স্থানান্তর ফরম-১৩ সঠিকভাবে ফিলাপ করে এর সাথে কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে। এরপর স্বশরীরে আবেদনকারীকে অফিসে গিয়ে আবেদনটি জমা দিয়ে আসতে হবে। আবেদন জমা দেওয়ার ১ সপ্তাহের মধ্যে ভোটার এলাকা স্থানান্তরের আবেদনটি গৃহীত হয়েছে মর্মে ১০৫ নম্বর থেকে আবেদন ফরমে লেখা মোবাইল নাম্বারে মেসেজ আসবে। এই ম্যাসেজ আসার অর্থ হচ্ছে, আপনার ভোটার এলাকা স্থানান্তরের আবেদনটি প্রাথমিকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে।

এরপর ২য় সপ্তাহ বা ৩য় সপ্তাহের মধ্যে মোবাইলে আরো একটি ম্যাসেজ আসবে। ম্যাসেজে বলা হবে আপনার ভোটার এলাকা স্থানান্তরের আবেদনটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তখন আপনি বুঝে নিবেন যে, আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তন হয়ে গেছে।

ভোটার এলাকা স্থানান্তর ফরম জমা দেওয়া

আপনি এখন যে এলাকার ভোটার হতে চাচ্ছেন অর্থ্যাৎ ভোটার স্থানান্তর ফরমের ৫ নং ক্রমিকে যে ঠিকানা লিখেছেন সেই ঠিকানার নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার এলকা পরিবর্তনের ফরম জমা দিতে হবে। অবশ্যই মনে রাখবেন যে, উপজেলা নির্বাচন অফিসে নিজে উপস্থিত হয়ে ভোটার স্থানান্তর ফরম (NID Transfer Form) জমা দিতে হবে।

এরপর ভোটার এলাকা স্থানান্তরের আবেদন অনুমোদন হলেই, ওই এলাকার ভোটার তালিকায় আপনার নাম অর্ন্তভুক্ত হয়ে যাবে। অনলাইনে এড্রেস পরিবর্তন দেখতে পারবেন এবং পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আপনি ভোট দিতে পারবেন।

ভোটার এলাকা স্থানান্তর হয়ে যাওয়ার পর আপনি কিন্তু নতুন ঠিকানা যুক্ত জাতীয় পরিচয় পত্র (Nid Card) পাবেন না। অর্থাৎ ঠিকানা পরিবর্তনের কারণে সংশোধিত ভোটার আইডি কার্ড দেয়া হয় না। এক্ষেত্রে যদি আপনার সংশোধিত জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন হয়, আপনাকে NID Reissue Fee পরিশোধ করে জাতীয় পরিচয় পত্র রিইস্যুর আবেদন করতে হবে। আবেদন করার ১ সপ্তাহের মধ্যে নতুন ঠিকানার আইডি কার্ড পাবেন।

ঠিকানা পরিবর্তন করার পর নতুন ঠিকানার আইডি কার্ড পাওয়ার নিয়ম

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করে ঠিকানা পরিবর্তন হওয়া পর নতুন ঠিকানার ভোটার আইডি কার্ড প্রয়োজন হয়। ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার পর যেহেতু নির্বাচন কমিশন নতুন কার্ড দাখিল করে না তাই কার্ড পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হয়। আবেদন করার জন্য ২৩০ টাকা ফি পরিশোধ করে অনলাইনে আবেদন করার মাধ্যমে নতুন কার্ড পাওয়া যাবে। আবেদন কিভাবে করতে হয় তা জানতে নিচের ভিডিওটি দেখুন অথবা এখানে ক্লিক করুন

ঠিকানা পরিবর্তন করার পর নতুন এনআইডি (NID) উত্তোলন করুন। New NID Collect after Address Change

ভোটার এলাকা স্থানান্তর ফরম পূরন করার নিয়ম

ভোটার এলাকা স্থানান্তর ফরম ১৩ সঠিকভাবে ফিলাপ না করলে আবেদনটি বাতিল হতে পারে। তাই সতর্কতার সহিত ফরমটি ফিলাপ করা জরুরী। ফরমে উল্লেখিত ক্রমিক

  • ১। আবেদনকারীর নামঃ এখানে নিজের নাম লিখতে হবে।
  • ২। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর (NID)ঃ আইডি কার্ডের নাম্বার লিখতে হবে।
  • ৩। জন্ম তারিখঃ আইডিতে উল্লেখিত জন্ম তারিখ লিখতে হবে।
  • ৪। বর্তমান ভোটার তালিকাভূক্তি সংক্রান্ত তথ্যাদি- যে ঠিকানায় বর্তমানে ভোটার আছেন সেই ঠিকানা লিখতে হবে।
  • ৫। যে ভোটার এলাকায় ভোটার তালিকায় নাম স্থানান্তর করিতে ইচ্ছুক- এই অংশটুকু হচ্ছে আপনি এখন যে এলাকার ভোটার হতে চাচ্ছেন সেই ঠিকানা লিখতে হবে।
  • ৬। ৫ নম্বর ক্রমিকে বর্নিত ঠিকানায় যে সময় হইতে অবস্থান করিতেছেনঃ যে এলাকায় এখন স্থানান্তর হতে চাচ্ছেন সেই ঠিকানায় আপনি কতদিন যাবৎ অবস্থান করছেন তা উল্লেখ করতে হবে।
  • ৭। নাম স্থানান্তরের কারণঃ যে কারনে এখন ভোটার এলাকা স্থানান্তর করতে চাচ্ছেন তা লিখতে হবে।
  • ৮। কি কি কাগজপত্র আবেদনপত্রের সাথে জমা দিতে হবে তা বলা আছে।
  • এরপর আবেদনকারীর স্বাক্ষর দিতে হবে এবং সর্বশেষ আবেদনকারীকে সনাক্তকারীর স্বাক্ষর এই অংশে আপনি এখন যে এলাকার ভোটার হতে চাচ্ছেন সেই এলাকার মেম্বার/কাউন্সিলর/চেয়ারম্যান/মেয়র কর্তৃক পূরন করে সীলসহ স্বাক্ষর নিতে হবে।

ভোটার এলাকা স্থানান্তর করতে কি কি কাগজপত্র লাগবে

  • আবেদনপত্রের সাথে নিন্মোক্ত কাগজপত্র জমা দিতে হবেঃ
  • ১। আবেদনকারীর ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
  • ২। যে এলাকায় স্থানান্তর হবেন সেই এলাকার নাগরিকত্ব প্রত্যয়নপত্র।
  • ৩। বিদ্যুৎ/পানি বিল/গ্যাস বিল/ট্যাক্স রশিদ/ বাড়ি ভাড়ার প্রমানপত্র/ভাড়াটিয়া তথ্য ফরম
  • ৪। ফরম-১৩ এর ২য় পাতায় আবেদনকারীকে সনাক্তকারী হিসেবে সংশ্লিষ্ট মেয়র/চেয়ারম্যান/কাউন্সিলর/মেম্বারের এনআইডি নাম্বারসহ নাম ও স্বাক্ষর এবং সীল থাকতে হবে।

যে তথ্য জানা প্রয়োজন

ভোটার এলাকা স্থানান্তর কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের একটি চলমান কাজ। যেকোন সময় আবেদন করে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করা যায়। শুধুমাত্র নির্বাচনী তফসীল ঘোষনা হলে সেই তফশীল ঘোষণার তারিখ থেকে নিয়ে নির্বাচন সময় পর্যন্ত স্থানান্তর কার্যক্রম বন্ধ থাকে। এছাড়াও জরুরী প্রয়োজনে এ কাজ বন্ধ রাখতে পারে নির্বাচন কমিশন। তবে এক্ষেত্রে অফিস নোটিশ বোর্ডে নোটিশ জারি করা থাকবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top