জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেছে? ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে করণীয় কি এবং কিভাবে নতুন ভোটার আইডি কার্ড হাতে পাবেন তা জানতে নিচের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করুন।
আপনার ভোটার আইডি কার্ড যদি কোন কারনে হারিয়ে ফেলেন তাহলে অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে ২ থেকে ৭ দিনের মধ্যে নতুন ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
এজন্য আপনাকে নিকটস্থ থানায় গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেছে মর্মে একটা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে। এছাড়াও বর্তমানে আপনি ঘরে বসেই অনলাইনে জিডি করতে পারেন। জিডি করার পর জিডির কপি দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের ওয়েবসাইটে গিয়ে রিইস্যুর আবেদন করতে হবে। এরপর অনুমোদন হলে অনলাইন থেকে নতুন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে করণীয়
ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে নিকটস্থ থানায় গিয়ে জিডি করতে হবে। এরপর সেই জিডির কপি দিয়ে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে গিয়ে রিইস্যুর আবেদন করতে হবে।
আবেদন করার ২/৭ দিনের মধ্যে আপনার মোবাইলে ১০৫ নম্বর থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য মেসেজ আসবে। তখন জাতীয় পরিচয়পত্রের অনলাইন থেকে আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।
আরও জানুনঃ
ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে জিডি করার নিয়ম
বর্তমানে সাধারণ ডায়েরি বা জিডি ২টি পদ্ধতিতে করা যায়। ১। ম্যানুয়ালি (হাতে লিখে) ২। অনলাইন জিডি
১। ম্যানুয়ালি (হাতে লিখে) জিডি করার নিয়ম
ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে নিকটস্থ থানায় গিয়ে জিডি করতে হয়। আর জিডি করার জন্য যেকোন কম্পিউটার দোকানে গিয়ে বা সাদা কাগজে আপনি নিজেই জিডির জন্য দরখাস্ত লিখবেন। নিচে নমুনা দেওয়া হলো-
বরবার,
অফিসার ইনচার্জ
……………. থানা
…………….. জেলা।
বিষয়ঃ সাধারন ডায়েরি করার আবেদন প্রসঙ্গে।
জনাব,
আমি নিন্ম স্বাক্ষরকারী মোঃ আলাল মিঞা, পিতা- জালাল মিঞা, মাতার নাম-………………. গ্রাম-………., ডাকঘরঃ …………….., উপজেলাঃ …………………, জেলাঃ ………………। আমি এই মর্মে লিখিতভাবে জানাচ্ছি যে, গত ………………….. তারিখে আমার নিজ বাড়ি হতে শহরে যাওয়ার পথে অজ্ঞাত কোন স্থানে আমার জাতীয় পরিচয়পত্র কার্ডটি হারিয়ে ফেলি। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ৭৮০০০০০০৫৬। সম্ভাব্য অনেক স্থানে খোঁজাখুজি করেও আমি আমার জাতীয় পরিচয়পত্র পায়নি। এমতাবস্থায় বিষয়টি সাধারণ ডায়েরিভুক্ত করা একান্ত প্রয়োজন।
অতএব, উপরোক্ত বিষয়টি আপনার থানায় সাধারণ ডায়রীভুক্ত করিতে আপনার মর্জি হয়।
তারিখঃ………………. বিনীত
. আপনার স্বাক্ষর দিন
. মোঃ আলাল মিঞা
. মোবাইল-০১৭০০০০০০০০
এভাবে জিডির আবেদনটি লিখে ২ টি কপি করে নিকটস্থ থানায় বা আপনার নিজের থানায় গিয়ে জমা দিবেন। এরপর থানা থেকে ডিউটি অফিসার বা অফিসার ইনচার্জ আপনার আবেদনটি গ্রহন করে জিডি নম্বর বসিয়ে অফিশিয়াল সীল মেরে আপনাকে ১ কপি দিবে।
আপনাকে দেওয়া জিডির কপিতে জিডির নাম্বারসহ পুলিশ অফিসারের নাম, পদবী , মোবাইল নম্বর থাকবে। যা আপনার হারানো আইডি কার্ড উত্তোলন আবেদন করতে লাগবে। এখন আপনি জিডির কপি দিয়ে অনলাইনে Nid Card Reissue আবেদন করবেন।
২। অনলাইন জিডি করার নিয়ম
এখন ঘরে বসেই জিডির আবেদন করা যায়। এজন্য বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে আবেদন করতে হবে। আপনি নিজে কাজটি না করতে পারলে আপনার পাশের যেকোন কম্পিউটারে অনলাইনে কাজ করে এমন দোকানে গিয়েও আবেদন করতে পারেন।
ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে আবেদন করার নিয়ম
আপনার ভোটার কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র যদি হারিয়ে যায় তাহলে আপনাকে নতুন আইডি কার্ড পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
আপনি যদি ২০১৯ সালের পরে ভোটার হয়ে থাকেন এবং অফিস থেকে আপনাকে কোন আইডি কার্ড না দিয়ে থাকে তাহলে আপনি জিডি না করেই এনআইডি কার্ডের ওয়েবসাইট থেকে বিনামূল্যে নতুন করে আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।
আপনি যদি ২০১৯ সালের পূর্বের ভোটার হোন এবং আইডি কার্ড হারিয়ে যায় তাহলে জিডি করার মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করে ২৩০ টাকা ফি পরিশোধ করে আবেদন করতে হবে।
প্রথমে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে ক্লিক করুন
রেজিস্ট্রেন করা না থাকলে রেজিস্ট্রেশন বাটনে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশন কমপ্লিট করে পরবর্তী ধাপ সম্পন্ন করতে হবে। আর যাদের অলরেডি রেজিস্ট্রেশন করা আছে তারা Nid Number, Password এবং ক্যাপচা প্রবেশ করিয়ে লগইন বাটনে ক্লিক করতে হবে।
এর পর আপনি যদি ২০১৯ সালের পরের ভোটার হয়ে থাকেন এবং অফিস থেকে এনআইডি কার্ড না দিয়ে থাকে তাহলে সরাসরি ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করলে নতুন এনআইডি কার্ড পিডিএফ ডাউনলোড করতে করতে পারবেন।
আর যারা ২০১৯ সালের পূর্বের ভোটার তারা রিইস্যু অপশনে ক্লিক করে আবেদনের পরবর্তী ধাপে যাবেন।
এরপর এডিট বাটনে ক্লিক করুন
এডিট বাটনে ক্লিক করার পর নিচের মত পপআপ আসবে। এখান থেকে বহাল বাটনে ক্লিক করে দিন।
এখন আপনাকে ফি পরিশোধ করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র হারানোর ফি কিভাবে পরিশোধ করে তা জানতে আমার ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও দেখতে পারেন।
এরপর পুনঃমুদ্রনের কারন অপশন থেকে হারিয়ে গেছে সিলেক্ট করে দিন। এখন জিডির কপি থেকে জিডি নম্বর, থানা, পুলিশের নাম, পুলিশের পদবী এবং জিডির তারিখ বসিয়ে দিয়ে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
এরপর ফি পরিশোধ করা হয়ে গেলে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করে জিডির স্ক্যান করা কপিটি আপলোড করে দিতে হবে। এরপর পরবর্তী বাটনে ক্লিক করে সাবমিট দিলে আবেদনপত্রটি ডাউনলোড করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড হারানোর আবেদনপত্র অফিসে জমা দিতে হবে না। নিজের কাছেই রেখে দিন। আপনার আবেদন প্রক্রিয়া শেষ। নাকে তেল দিয়ে এখন ঘুমিয়ে পড়েন। ২ থেকে ৭ দিনের মধ্যে আপনার মোবাইলে ১০৫ থেকে ম্যাসেজ আসবে আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিতে বলবে। তখন আবারো আপনার এনআইডি ডাটাবেইজে প্রবেশ করে ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করলে নতুন আইডি কার্ডের পিডিএফ কপি ডাউনলোড হয়ে যাবে।
ডাউনলোডকৃত পিডিএফ কপি প্রিন্ট করে লেমিনেটেড করে নিলেই পেযে গেলেন আপনার হারানো জাতীয় পরিচয়পত্র।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন/হারানো ফি পরিশোধ পদ্ধতি
আপনি যদি জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করাতে চান বা হারানো কার্ড ফিরে পেতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমান ফি প্রদান করতে হবে। সংশোধন বা পুনরায় আইডি কার্ড ফিরে পেতে ২৩০ টাকা ফি পরিশোধ করতে হবে।
ফি প্রদানের নূন্যতম ৩০ মিনিট পর আপনি সংশোধন বা হারানোর জন্য আবেদন করতে পারবেন। ফি নিম্নোক্ত ব্যাংক এবং মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রদান করা যাবে।